টিএনবি ডেক্সঃ নতুন পদ্ধতিতে পাবলিক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করতে যাচ্ছে শিক্ষাবোর্ডগুলো। পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে নির্ভরযোগ্য নম্বর প্রদান নিশ্চিতের লক্ষ্যে এ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকে ২০১৭ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এই পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন থেকেই নতুন এই পদ্ধতি কার্যকর করা হবে। পাসের হার বাড়াতে যেনতেনভাবে খাতা মূল্যায়নে ব্যাপক সমালোচনার মুখে এই সিদ্ধান্ত নিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় দেশের ২৮ হাজার ৩৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬১৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে। এর মধ্যে ৯ লাখ ১০ হাজার ৫০১ জন ছাত্র এবং আট লাখ ৭৬ হাজার ১১২ জন ছাত্রী। গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার ৯০ জন। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ২ মার্চ। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে ৪ থেকে ১১ মার্চ পর্যন্ত। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, প্রথম দিন সকাল ১০টা থেকে সাধারণ বোর্ডের এসএসসিতে বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র, সহজ বাংলা প্রথম পত্র এবং বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি; মাদরাসা বোর্ডের দাখিলে কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তিনি জানান, আটটি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এসএসসিতে ১৪ লাখ ২৫ হাজার ৯০০ জন, মাদরাসা বোর্ডের দাখিলে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৫০১ জন ও এসএসসি (ভোকেশনাল) এক লাখ ৪ হাজার ২১২ জন অংশ নিবে। এর মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬ লাখ সাত হাজার ১২৪ জন, অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখ ৭৬ হাজার ১৯৮ জন ও বিশেষ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখ ৪৫ হাজার ২৯৮ জন। বিদেশে আটটি কেন্দ্রের মাধ্যমে ৪৪৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে। এবার প্রশ্ন ফাঁস হবে না উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ বলেন, কেউ প্রশ্ন ফাঁসের পেছনে ছুটলে ক্ষতি ছাড়া কোনো লাভ হবে না। কেউ ফেইসবুকে ভুয়া প্রশ্ন তুলে দিলে বিটিআরসি সঙ্গে সঙ্গে সেই লিংক বন্ধ করে দেবে। এসএসসির প্রশ্ন ফাঁসের সুযোগ নেই দাবি করে তিনি আরো বলেন, সরকারকে হেয় করার জন্য প্রশ্ন ফাঁস করা হয়। আবার অনেকে ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণে প্রশ্ন ফাঁস করে বিক্রি করে। ভুয়া প্রশ্ন বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করে। পরীক্ষা কেন্দ্রে কেবল কেন্দ্র সচিবদের ফোন নিয়ে প্রবেশের অনুমতি থাকলেও এবার সেই ফোনটি স্মার্ট ফোন হতে পারবে না বলেও জানান মন্ত্রী। তিন বলেন, কেন্দ্র সচিবের অনুমতি ছাড়া পরীক্ষার্থীর বাইরে অন্য কেউ কেন্দ্রের সীমানায় প্রবেশ করতে পারবেন না। বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডে আয়োজিত কেন্দ্র সচিবদের সভায় স্মার্ট ফোন নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে না যাওয়ার বিষয়ে জানানো হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এটা করলে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সে জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুরুতে এমসিকিউ অংশের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সকাল সাড়ে নয়টায় শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশ করতে হবে। নয়টা ৩৫ মিনিটে উত্তরপত্র দেয়া হবে। এবার এসএসসিতে বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র ছাড়া সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। এ বছর থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা নামে দুটি নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তিনি জানান, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান প্রমুখ। নতুন পদ্ধতিতে পাবলিক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন: পাবলিক পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে নির্ভরযোগ্য নম্বর প্রদান নিশ্চিতের লক্ষ্যে নতুন পদ্ধতিতে খাতা মূল্যায়ন করা হবে। এ জন্য নম্বর প্রদান নির্দেশিকা ও নমুনা উত্তর তৈরি করবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞ শিক্ষকরা। পরে কোন প্রশ্নের কোন ধরনের মানের উত্তরের জন্য নম্বর প্রদান করা উচিত এ বিষয়ে কর্মশালা করবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবোর্ডগুলো। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আওতাধীন পরীক্ষকদের ১২ শতাংশ উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের ওপর একটি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে প্রধান পরীক্ষককে। সেই প্রতিবেদনগুলো সংশ্লিষ্ট বোর্ড কর্তৃপক্ষ ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠাবে। এরপর বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট এর আলোকে একটি প্রতিবেদন করবে। সেখানে পরীক্ষক/প্রধা